চরফ্যাশন ইতিহাস

 


চরফ্যাশন বাংলাদেশের ভোলা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা, যা ৪টি থানার অধীনে ১টি পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি বরিশাল বিভাগ এর অধীনে ভোলা জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত।

নামকরনের ইতিহাস

চরফ্যাশন উপজেলার নাম করণের ভূমিকাঃ

প্রত্যেকটি বস্ত্ত বা এলাকার একটি নাম থাকাটাই স্বাভাবিক। আর এই নাম থাকার পিছনেও থাকে বিভিন্ন যুক্তি বা সার্থকতা। এ এলাকাটির নাম চরফ্যাশন হওয়ার পিছনেও যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। যেমন-এ চরফ্যাশন পূর্বে কখনো নোয়াখালী, কখনো বরিশাল আবার কখনো বা পটুয়াখালীর গলাচিপার সাথে সংযুক্ত ছিল। বর্তমানে চরফ্যাশন থানাটি ভৌগলিক অবস্থান কিন্তু পূর্বে এমন ছিল না। এ চরফ্যাশন ছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য চর। ঠিক তখনই বরিশালের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এইচ,জে,এইচ ফ্যাশন সাহেব ১৮৮৫-৮৭ সালের দিকে প্রশাসনিক ভাবে এ অঞ্চলের চরগুলির প্রতি দৃষ্টি দেন এবং এলাকার প্রান কেন্দ্র বর্তমান চরফ্যাশন বাজারটি গঠন করেন। মিঃ ডোনাবানের পরিকল্পনা অনুসারে প্রস্তাবিত এ বাজারের নাম রাখা হয় চরফ্যাশন বাজার। পরবর্তীতে এলাকার একমাত্র প্রানকেন্দ্র চরফ্যাশন বাজারের নাম অনুসারে গোটা এলাকার নাম করন করা হয় চরফ্যাশন। তিনি চরফ্যাশনের উন্নতির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।

 

চরফ্যাশন উপজেলায় উন্নীত হওয়ার ধারাবাহিক পর্যাক্রম : চরফ্যাশন উপজেলা আয়তনের দিক থেকে কত বড় তা দেশের নেতৃবৃন্দের অনেকেই জানেন না। শুধু আয়তনই নয়, লোক সংখ্যার দিক থেকেও বাংলাদেশের অনেক জেলার  লোক সংখ্যা চেয়ে বেশি। ১৯৬৮ ইং সালে গঠিত হয় চরফ্যাসন থানা। ১৯৮২ সালের ১৫ ডিসেম্বর চরফ্যাশন থানাকে মান উন্নীত করা হয়। মান উন্নিত থানা/উপজেলার প্রথম উপজেলা নির্বাহি অফিসার জনাব বিনয় কৃষ্ণ কর্মকার। তিনি চরফ্যাশন উপজেলাকে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। চরফ্যাসন উপজেলায় বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ড ছাড়াও বিভিন্ন এন,জি,ও সংস্থাও উন্নয়নের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছেন।

নামকরণ

এ শহরটি মূলত চরফ্যাশন বাজার নামক একটি বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। চরফ্যাশন পূর্বে কখনো নোয়াখালী কখনো বরিশাল আবার কখনো বা পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সাথে সংযুক্ত ছিল। বর্তমানে চরফ্যাশন এর ভৌগলিক অবস্থান পূর্বে এমন ছিল না। এ অঞ্চল ছিল অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চরের সমন্বয়ে গঠিত একটি এলাকা। তৎকালীন বরিশালের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এইচ.জে.এইচ ফ্যাশন সাহেব ১৮৮৫-৮৭ সালের দিকে প্রশাসনিক ভাবে এ অঞ্চলের চরগুলির প্রতি দৃষ্টি দেন। তিনি এ এলাকায় একটি বাজার স্থাপন করেন। ফ্যাশন সাহেব চর এলাকায় বাজার স্থাপন করেন বলে মি. ডোনাবানের প্রস্তাবে এ বাজারের নাম হয় চর ফ্যাশন বাজার। পরবর্তীতে এ এলাকার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে চরফ্যাশন বাজারটি। পরবর্তীতে এলাকার প্রাণকেন্দ্র চরফ্যাশন বাজারের নাম অনুসারে গোটা এলাকার নাম করণ করা হয় চরফ্যাশন

ইতিহাস

১৮৮৫ সালে ভাসমান চরের কিছু অংশ চাষাবাদের যোগ্য হয়ে উঠে। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে শুরু হয় জনবসতি, গড়ে উঠে জনপদ। এরপর তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ‘জি ফ্যাশন’ এর নামানুসারে চরফ্যাশন উপজেলা নামকরণ করা হয়। ১৯০০ সালে অভয় চন্দ্র সেন নামক এক ডেপুটি কালেক্টর আসেন। এ জনমানবশূন্য এলাকায় বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে অভয় চন্দ্র সেন জনসাধারণের মধ্যে জমি বিতরণ শুরু করেন। চরাঞ্চল হওয়ায় তখন মানুষের এ স্থানে বসবাসের প্রতি অনীহার কারণে তিনি মানুষের মধ্যে জোরপূর্বক জমি বিতরণ করেন। যাকে ডেকে নিয়ে জমি দিয়েছেন তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হলেন, আর যে কালেক্টরের নিকট যাওয়াকে ভয় পেয়েছেন তিনি সম্পত্তির মালিক থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ১৯২০ সালে চরফ্যাশন বাজার গড়ে উঠে। ধীরে ধীরে এ বাজারকে কেন্দ্র করে আধুনিকায়ন ও ক্রমাগত উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বর্তমান শহর হিসেবে গড়ে উঠেছে। ১৯৪৮ সালে ভোলা শহর থেকে চরফ্যাশনের সড়ক পথের রাস্তা সম্প্রসারিত হয়। বাজারে সর্বপ্রথম আঃ সোবহান মুন্সীর হোটেল ছিল। তার পর সেখানে ঢাকা হোটেল নামক একটি হোটেল স্থাপিত হয়। বর্তমানে ওই স্থানে ক্যাফে জুয়েল হোটেল ও কামরুল ডিজিটাল ষ্টুডিও রয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে চরফ্যাশন পৌরসভা স্থাপিত হলে চরফ্যাশন পৌরশহরের মর্যাদা লাভ করে

চরফ্যাশনের বিখ্যাত বা দর্শনীয় স্থানতথ্য

  1. চরফ্যাশন জ্যাকব টাওয়ার
  2. শেখ রাশেল শিশু পার্ক, চরফ্যাশন
  3. মেঘনা নদীর তীর মাদ্রা
  4. চর কুকরী মুকরী
  5. শিশু পার্ক
  6. চরফ্যাশন সরকারি কলেজ
  7. খামার বাড়ি
  8. খাজুর গাছিয়া মিনি কক্স বাজার
  9. ঢাল চর
  10. তারুয়া সমূদ্র সৈকত
  11. মাদ্রাজ ব্লক স্পট
  12. বেতুয়া ঘাট



এক নজরে চরফ্যাশন উপজেলা

০১)  উপজেলার নাম   :  চরফ্যাশন           
০২)  জেলার নাম :  ভোলা
০৩)  উপজেলার আয়তন:  ১,৪৪০.০৪ বর্গ কিলোমিটার
০৪)  লোকসংখ্যা:  ৪,৫৬,৪৩৭ জন(সর্বশেষ আদমশুমারী অনুযায়ী)
০৫) ২০২০ সাল অনুযাযী ভোটার সংখ্যা  :  ৩,২০,৬৭২ জন ( পুরুষ ভোটার ১,৬৫,৮৪৮ জন, স্ত্রী ভোটার ১,৫৪,৮২৪ জন)         
০৬) ২০১৮ সাল অনুযাযী ভোটার সংখ্যা:  ৩,২০,৫৩০ জন
০৭)  পৌরসভার সংখ্যা:  ০১ টি
০৮)  ইউনিয়নের সংখ্যা :  ২১ টি
০৯)  উপজেলা সদর হতে জেলা সদরের দুরত্ব: ৭০ কিলোমিটার
১০)  উপজেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা:  রিক্সা, মোটর  গাড়ী, হোন্ডা, টেক্সি,  কার ও নৌযান
১১)  গ্রামের সংখ্যা: ১৯৯ টি
১২)  মৌজার সংখ্যা :  ১১৫ টি
  

               

(১৩)  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান      

ক.  সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়:  ২১৩ টি   
খ.  বেসরকারী  প্রাথমিক বিদ্যালয়:  ৭৭ টি
গ. রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়:  ০৩ টি
ঘ. এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়:  ৩৫টি
ঙ.  কেজি স্কুল:  ০৮টি
  
চ. মাধ্যমিক বিদ্যালয়:  ৭৬ টি(বালক ৬৪+বালিকা ১২)
ছ. কলেজ:   ১২ টি (মহিলা ২ + ডিগ্রী - ৪)
জ. সরকারি কলেজ:  ০১ টি (চরফ্যাসন সরকারি কলেজ)                                                            
ঝ. আলীম মাদ্রাসা :  ০৮ টি ( মহিলা - ০১টি )
ঞ. ফাজিল মাদ্রাসা :  ০৮ টি
ট. কামিল মাদ্রাসা :  ০২ টি ( মহিলা - ০১টি )  
ঠ. দাখিল  মাদ্রাসা:  ৫২ টি ( মহিলা - ০১টি )
ড. এবতেদায়ী মাদ্রাসা:  ১৯২ টি
ঢ. টেকনিক্যাল ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ:  ০২ টি

 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

Facebook