তরুণ কণ্ঠশিল্পী আতিফ আহমেদ নিলয়। সোমবার বিকালে নিজের ঘর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্তমানে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রাখা আছে। প্রাথমিক ধারণা, তরুণ এই গায়ক আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু কোন অভিমানে ঝরে গেল এমন একটি প্রতিভা?
এ বিষয়ে জানতে কথা হয় আরেক কণ্ঠশিল্পী তাসনিম মীমের সঙ্গে, যিনি নিলয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিলেন। মীম জানান, কিছুদিন আগে আতিফ আহমেদ নিলয়ের বাবা ক্যানাসরে ভুগে মারা যান। সেই থেকে পারিবারিকভাবে তিনি একটু ডিপ্রেশনে ছিলেন। এ নিয়ে নিলয় ফেসবুকে মাঝেমধ্যে হতাশাজনক নানা পোস্টও দিতেন।’
নিলয় তার ফেসবুকে শেষ পোস্টটি দেন গত ২১ মে। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আল্লাহ আমার উপর হেদায়েত দান করুন। দিন দিন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছি। নিজের অজান্তে কেন যেন সবাইকে কষ্ট দিয়ে কথা বলি। কিছু বুঝতে পারতেছি না কেন এমন হচ্ছে।’ এই পোস্ট দেওয়ার দুইদিনের মাথায় আত্মঘাতি হলে তিনি।
তবে শুধু বাবাকে হারানোর বেদনা নয় বা নিজ পরিবারের সমস্যা নয়, স্ত্রী নওশীন আক্তারের পরিবার নিয়েও নিলয় ডিপ্রেশনে ভুগতেন বলে জানিয়েছেন তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন্ধু।
এর প্রমাণ মেলে নওশীনের দেওয়া একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে। সেখানে তিনি দুটি ছবি পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, নওশীনের কপাল বেয়ে রক্ত ঝরছে। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আমি যদি মারা যাই, আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে আমার বাবা-মা।’ যদিও পোস্টটি পরে ডিলিট করে দেন নওশীন। তবে সেটির স্ক্রিনশট রেখে দেন নিলয়ের এক বন্ধু।
এদিকে, নিলয়ের মরদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে- এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। সেখানে মরদেহ জড়িয়ে ধরে একটি মেয়েকে হাউমাউ করে উচ্চস্বরে কাঁদতে দেখা যায়। তিনি বিলাপ করছিলেন। যদিও তার সব কথা বোঝা যায়নি।
কাঁদতে কাঁদতে অস্পষ্ট স্বরে ওই মেয়েটি নিলয়কে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, ‘আমি তোমাকে এভাবে যেতে দেব না। একবার তুমি আমার সাথে কথা বলো। আমি তোমাকে ছাড়া কীভাবে থাকবো।’ ধারণা করা হচ্ছে, ওই মেয়েটি নিলয়ের স্ত্রী নওশীন।
‘কার বাসর ঘুমাও বন্ধু’ ও ‘বোকা পাখি আপন চিনলি না’সহ বেশ কয়েকটি শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন আতিফ আহমেদ নিলয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি খবুই জনপ্রিয় ছিলেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি কাছের বন্ধুসহ অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছে এবং দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
কপিরাটি : ঢাকাটাইমস